শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৫ অপরাহ্ন
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো এখন আর ওই অঞ্চলের মানুষের জানমালের সুরক্ষা দিতে পারছে না। ষাটের দশকে নির্মিত এসব বাঁধের অধিকাংশই ক্ষয়ে গিয়ে ও উচ্চতা কমে এখন জরাজীর্ণ। তার ওপর ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেন ও আম্পানের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত এসব বাঁধ।
কোনো কোনো এলাকার সাময়িক মেরামত করা হলেও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে বাঁধ উঁচু ও চওড়া করার কাজ সেভাবে হয়নি। সরকারের উদ্যোগ, পরিকল্পনার ঘাটতিকে আরও প্রকট করে তুলছে জলবায়ুর পরিবর্তন। পলি জমে নদ-নদীর তলদেশ স্ফীত হয়েছে, বেড়েছে জোয়ারের পানির উচ্চতা। ফলে স্বাভাবিক সময়েই জীর্ণ, ভাঙাচোরা বাঁধ উপচে অনেক লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ছে। আর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গতকাল মঙ্গলবার উপকূলে পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেছে। ফলে পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাটের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাঁধ উপচে জোয়ারের পানি লোকালয় সয়লাব করেছে। ২০০৭ সালে সিডরের পর এসব জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলেছিল, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ পুনর্নির্মাণের জন্য অর্থসহায়তা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ গত বছর আম্পানের পরও পাউবো একই কথা বলেছিল।
এবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব শুরুর পরও পাউবো বলল, দক্ষিণাঞ্চলের এসব বাঁধ উঁচু করে সংস্কার ও ব্লক দিয়ে পাড় বাঁধাই করার কোনো বিকল্প নেই। পাউবোর কথা এক থাকলেও মাঝখানে সময় চলে গেছে ১৪ বছর। প্রতি বর্ষায় আতঙ্ক নিয়েই এই দীর্ঘ সময় পার করেছে মানুষ। পাউবোর বরিশাল আঞ্চলিক প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্র জানায়, বরিশাল বিভাগের ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে মাত্র ৫৯ কিলোমিটার বাঁধ টেকসই উন্নয়ন হয়েছে। বাকি বাঁধ সেই ষাটের দশকেরই রয়ে গেছে। এই বিপুল পরিমাণ বাঁধ বছর বছর জোড়াতালি দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করছে পাউবো।